টাইম ট্রাভেল কি সম্ভব
- আপডেট সময় : ১১:২৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪ ৫৩ বার পড়া হয়েছে
বিজ্ঞানের একটি অন্যতম আশ্চর্যজনক অজানা প্রশ্ন হচ্ছে টাইম ট্রাভেল কি সম্ভব? এই টাইম ট্রাভেল নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। বিশ্ববাসীর সামনে টাইম ট্রাভেলের ধারণা সবচাইতে বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করে ১৮৯৫ সালে। এইচজি ওয়েলস এর “দ্যা টাইম মেশিন” নামে একটি বৈজ্ঞানিক গল্প কাহিনী প্রকাশের মধ্য দিয়ে মানুষ টাইম ট্রাভেলের সাথে সবচাইতে বেশি পরিচিত হয়। তারপর থেকে টাইম ট্রাভেল নিয়ে অসংখ্য সিনেমা, গল্প কিংবা গল্প কাহিনী লেখা হয়েছে।
এসব সিনেমা বা কল্পকাহিনীতে দেখা যায় টাইম মেশিনে চড়ে খুব সহজেই কেউ একজন অতীতে কিংবা ভবিষ্যতে যেতে পারে। টাইম ট্রাভেল ব্যাপারটি এজন্যই খুব ইন্টারেস্টিং।
কিন্তু বাস্তবে টাইম ট্রাভেল কি সম্ভব?
টাইম ট্রাভেল সম্ভব কিনা এ নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে দুই রকম মতবাদ প্রচলিত আছে। একদল বিজ্ঞানী মনে করেন মানুষের পক্ষে কখনোই টাইম ট্রাভেল করে অতীতে কিংবা ভবিষ্যতে যাওয়া সম্ভব না।
আরেক দল বিজ্ঞানী মনে করেন বর্তমান প্রযুক্তিতে এটি সম্ভব না হলেও হয়তো বা অদূর ভবিষ্যতে টাইম ট্রাভেল করার জন্য মেশিন আবিষ্কার সম্ভব হতে পারে।
আমরা বর্তমানে যে ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করছি সেই প্রযুক্তিগুলো হয়তো ২০০ বছর আগে মানুষের কাছে অসম্ভব মনে হতো বা কল্পনায় ছিল না। কিন্তু সেই প্রযুক্তিগুলোই আমরা এখন হাতের মুঠোয় ব্যবহার করছি।
কে জানে হয়তো বা অদূর ভবিষ্যতে এমন সকল প্রযুক্তি আবিষ্কার হবে যেগুলোর মাধ্যমে মুহূর্তেই অতীত কিংবা ভবিষ্যতে টাইম ট্রাভেল করা যাবে।
আমরা ক্রমাগত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এখন যেটা বর্তমান কয়েক মুহূর্ত পরে সেটা অতীত। এখন যেটা ভবিষ্যৎ কয়েক মুহূর্ত পরে সেটা বর্তমান। তাই কোন কিছুই অসম্ভব নয় এই দুনিয়াতে।
টাইম ট্রাভেল কি সম্ভব এই প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য আপনাকে আগে মহাবিশ্বের কিছু বিষয় সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।
আমাদের পৃথিবীতে মাত্র ৩ টি মাত্রা রয়েছে। যেগুলোকে আমরা ডাইমেনশন বলতে পারি। ডাইমোনশন ৩ টি হলো দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা। কিন্তু বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন মহাবিশ্বে এই ৩ মাত্রার বাদেও আরো একটি মাত্রা রয়েছে। এই চতুর্থ মাত্রাটি হলো সময় কিংবা টাইম।
টাইম ট্রাভেল কি সম্ভব
মহাবিশ্বের সূচনার আগে কোন মাত্রার অস্তিত্ব ছিলনা। সকল কিছুই একটি বিন্দুতে ছিল। এই সময়ের কারণে আমরা জীবনে স্থান এবং কালকে আলাদা মনে করি। সময়ের কারণেই মহাবিশ্বের সর্বদা পরিবর্তিত হচ্ছে।
সময়ের আপেক্ষিকতায় টাইম ট্রাভেলের সম্ভাবনা
সময়ের আপেক্ষিকতা সম্পর্কে হয়তো আমাদের কিছুটা ধারণা রয়েছে। সময়ের আপেক্ষিকতায় হচ্ছে এমন একটি বিষয় যেখানে আপনি অতিবাহিত করেছেন মাত্র ১ ঘণ্টা কিন্তু মহাবিশ্বের কোন একটি স্থানে আরেকজনের অতিবাহিত হয়েছে মাত্র ১ মিনিট। অর্থাৎ ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন সময়ের প্রবাহ।
সময়ের আপেক্ষিকতার থিওরিতে টাইম ট্রাভেল সম্ভব।
যদি কোন মানুষ কে আলোর গতিতে চলতে পারে এরকম একটি মহাকাশযানে উঠিয়ে দেয়া হয়। তাহলে হয়তো তার পক্ষে অতীতে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে আলোর গতিতে চলে এরকম কোন বস্তু কিংবা যানবাহনের অস্তিত্ব পৃথিবীতে নেই। তাই টাইম ট্রাভেল করা তাত্ত্বিকভাবে সম্ভব হলেও প্র্যাকটিক্যালি সম্ভব হচ্ছে না।
ওয়ার্ম হোলের মাধ্যমে টাইম ট্রাভেল
আমরা ওয়ার্ম হোল বা ব্ল্যাক হোলের কথা অনেকেই শুনেছি। ব্ল্যাক হোল আসলে খুবই রহস্যময় একটি জিনিস। বিজ্ঞানীদের ধারণা ব্ল্যাক হোলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে সে হয়তো বা অতীত এবং ভবিষ্যৎ উভয়েই যেতে পারবেন।
এ ব্যাপারটি স্পষ্ট যে টাইম ট্রাভেল কোন সাধারণ বিষয় বা ঘটনা নয়। এটি অনেকটাই প্রকৃতির বিরোধী। কারণ প্রকৃতি আপনাকে কখনোই উতীত বা ভবিষ্যতে যাওয়ার অনুমতি দেবে না। তাই টাইম ট্রাভেল করে আপনি যদি অতীত কিংবা ভবিষ্যতে চলেও যান তাহলে মহাবিশ্বে গোলযোগ দেখা দিবে। আবার অতীত বা ভবিষ্যৎ থেকে বর্তমানে ফিরে আসতে পারবেন কিনা সেটা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা।
টাইম ট্রাভেল কি সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তর ততদিনই রহস্যময় থেকে যাবে যতদিন না পর্যন্ত টাইম ট্রাভেল করে মানুষ ফিরে আসতে না পারে।